Thursday, October 30, 2025

কৃষ্ণনগর জগদ্ধাত্রী পূজা — রাজার আবেশে ঐতিহ্যের আলোকিত উৎসব

কৃষ্ণনগর জগদ্ধাত্রী পূজা — রাজার আবেশে ঐতিহ্যের আলোকিত উৎসব

নদীয়া জেলার হৃদয়ে অবস্থিত কৃষ্ণনগর, শুধু ইতিহাস নয়—সংস্কৃতি, শিল্প ও দেবী ভক্তির এক অনন্য কেন্দ্র। দুর্গাপূজার রেশ কাটতেই কৃষ্ণনগরের অলিতে গলিতে শুরু হয় আর একটি অতি প্রিয় উৎসব—জগদ্ধাত্রী পূজা
এখানকার জগদ্ধাত্রী পূজা শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি এক অন্তরের আনন্দ, সমাজের মিলন আর শিল্পের অপূর্ব প্রকাশ

বুড়িমা কৃষ্ণনগর


🌼 দেবী জগদ্ধাত্রী কে?

জগদ্ধাত্রী শব্দের অর্থ — যিনি সকলকে ধারণ করেন, সকল জীবের রক্ষা করেন
তাঁকে আমরা দেখি—
শ্বেতবর্ণা, সিংহবাহিনী, চার হাতে ধনুক-বাণ-চক্র-শঙ্খ ধারণ করা এক মাতৃস্বরূপ দেবী হিসেবে।
কৃষ্ণনগরের মাটির কারিগররা দেবীর মুখ ও আবেগ ফুটিয়ে তোলে অত্যন্ত সূক্ষ্ম কৌশলে। এই সূক্ষ্ম কাজই কৃষ্ণনগরকে অন্য সব কেন্দ্র থেকে আলাদা করে।


🥁 শোভাযাত্রা ও আলোকসজ্জা — যেন এক আলোকমেলা

কৃষ্ণনগর জগদ্ধাত্রী পূজা মানেই আলোর সাগর।
বড় বড় প্যান্ডেল, থিম, আলোকসজ্জা, নাচ, ধুনুচি, ঢাক—সব মিলিয়ে শহর যেন এক রাতের জন্য জেগে ওঠা নতুন স্বর্গ

সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ভাসান শোভাযাত্রা
যেখানে দেবীর প্রতিমা, ব্যান্ড, ঢোল, আলোর বাহার, আর হাজারো মানুষের ভক্তিময় হাঁটা—এক অবিস্মরণীয় দৃশ্য তৈরি করে।


🎨 কৃষ্ণনগরের কারিগরি — বাংলার গর্ব

কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্পীদের খ্যাতি শুধু বাংলায় নয়, বিশ্ব জুড়েই।
তাঁদের হাতের স্পর্শে প্রতিটি প্রতিমা শুধু মাটির গড়ন নয়—উত্সর্গ, ভক্তি এবং অনুভূতির রূপ পায়।
দেবীর চোখ, ঠোঁট, আভা — যেন সত্যিই প্রজ্বলিত মাতৃস্নেহের ছাপ।


🎋 সমাজের মিলনমেলা

এই উৎসব গ্রাম, শহর, পাড়া, সমাজ—সব মানুষকে এক করে।
চার দিনের পূজায়—আনন্দ, প্রীতি, আড্ডা, প্রসাদ বিতরণ, আর সারারাত আলো দেখা—সব মিলিয়ে কৃষ্ণনগর হয়ে ওঠে এক পরিবার


📅 কখন হয়?

দুর্গাপূজার পরে, কার্তিক মাসে দ্বাদশী তিথিতে
প্রায় অক্টোবর–নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয় এই পূজা।


🛕 কেন জগদ্ধাত্রী পূজা এত বিশেষ?

  • চিত্তশুদ্ধি ও ভক্তির প্রতীক

  • সৃজনশীল শিল্পকর্মের অনন্য প্রকাশ

  • সমাজের বন্ধন দৃঢ় করে

  • ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে জীবন্ত রাখে

No comments:

Post a Comment